ক্রিয়াপদ ও ক্রিয়াপদের শ্রেণিবিভাগ


ক্রিয়াপদ : যে পদ দ্বারা কর্তার কার্য সম্পাদন করা বোঝায়, তাকে ক্রিয়াপদ বলে। ভাব প্রকাশের সম্পূর্ণতা অনুসারে ক্রিয়াকে দুই ভাগে ভাগ করা যায়
যেমন : . সমাপিকা ক্রিয়া . অসমাপিকা ক্রিয়া

. সমাপিকা ক্রিয়া : অর্থ গঠনগত দিক থেকে যে ক্রিয়াপদের দ্বারা বাক্যের বা বক্তার
মনোভাবের পূর্ণতা পরিসমাপ্তি সাধিত হয়, তাকে সমাপিকা ক্রিয়া বলে।
 যেমন : আমি স্কুলে যাব নাছেলেরা খেলা করছে । দ্বিতীয় বাক্যে খেলা সমাপিকা নয় । বাক্যটি সম্পূর্ণ করার জন্য করছে ক্রিয়া বসানো হয়েছে ।

. অসমাপিকা ক্রিয়া : যে ক্রিয়াপদের দ্বারা বাক্যের অর্থ সম্পূর্ণরূপে প্রকাশ পায় না এবং বাক্যের অর্থ সম্পূর্ণতার জন্য একটি সমাপিকা ক্রিয়ার অপেক্ষায় থাকতে হয়, তাকে অসমাপিকা ক্রিয়া বলে।  যেমন :
ছেলেরা খেলা ………
তারা সূর্যাস্ত দেখতে...
ছেলেরা খেলা করছে । (সমাপিকা)  
তারা সূর্যাস্ত দেখতে কক্সবাজার গেছে(সমাপিকা)

 কর্মপদ-সংক্রান্ত ভূমিকা অনুসারে ক্রিয়াপদের শ্রেণিবিভাগ আলোচনা
  কর্মপদ-সংক্রান্ত ভূমিকা অনুসারে ক্রিয়াপদকে চারটি শ্রেণিতে ভাগ করা যায়।
 যেমন : . সকর্মক  ক্রিয়া,
            . অকর্মক ক্রিয়া,
       . দ্বিকর্মক ক্রিয়া
            . প্রযোজক ক্রিয়া
# কর্মপদ ঃযে পদকে আশ্রয় করে ক্রিয়া তার কাজ সম্পাদন করে তাকে কর্মপদ বলে ।
# বাক্যে প্রথমে কর্মপদ চিহ্নিত করতে হবে ।
# ক্রিয়া পদকে ‘কী/কাকে’ দিয়ে প্রশ্ন করলে যে উত্তর পাওয়া যায় সেটি কর্মপদ ।যদি পাওয়া না যায়, তবে সেই ক্রিয়ার কোন কর্মপদ নেই ।

*যেমন : মামা আমাকে একটি বই কিনে দিয়েছেন। কী দিয়েছেন? উত্তর : বই (কর্মপদ)
কাকে দিয়েছেন? উত্তর : আমাকে (কর্মপদ)
দিয়েছেনক্রিয়াপদটির কর্মপদ থাকায় এটি সকর্মক ক্রিয়া

# মুখ্য বা প্রধান কর্ম  দ্বিকর্মক ক্রিয়ার বস্তুবাচক কর্মপদটি মুখ্য বা প্রধান কর্ম 
# গৌণ কর্ম ঃ ব্যক্তিবাচক কর্মপদটিকে গৌণ কর্ম বলে।
যেমন : ‘মামা আমাকে একটি বল কিনে দিয়েছেন’—এই বাক্যেবল’ (বস্তু) মুখ্য কর্ম এবংআমাকে’ (ব্যক্তি) গৌণ কর্ম  


. সকর্মক ক্রিয়া : যে ক্রিয়ার কর্ম থাকে, তাকে সকর্মক ক্রিয়া বলে। কর্মপদযুক্ত ক্রিয়াই সকর্মক ক্রিয়া।

. অকর্মক ক্রিয়া : যে ক্রিয়া কেবল কর্তাকে অবলম্বন করে ঘটে এবং যার কর্ম নেই, তাকে অকর্মক ক্রিয়া বলে। ধরনের ক্রিয়াকে কী বা কাকে প্রশ্ন করলে উত্তর পাওয়া যায় না।
 যেমন : ছেলেটি  কাঁদে। কী কাঁদে বা কাকে কাঁদে প্রশ্ন করলে কোনো উত্তর মেলে না। কাজেইকাঁদেক্রিয়াটি অকর্মক ক্রিয়া

. দ্বিকর্মক ক্রিয়া : যে ক্রিয়ার দুটি কর্মপদ থাকে, তাকে দ্বিকর্মক ক্রিয়া বলে। (উপরের *চিহ্নিত উদাহরণটি একটি দ্বিকর্মক ক্রিয়া )। 


 সমধাতুজ কর্ম : বাক্যের ক্রিয়া কর্মপদ  যদি একই ধাতু থেকে গঠিত হয় তাহলে  তাকে ওই কর্মপদের সমধাতুজ কর্মপদ বলে।
 যেমন : আজ আমি এমন ঘুম ঘুমিয়েছি । এখানে ক্রিয়াপদ ‘ঘুমিয়েছি’ ,আর কর্মপদ ‘ঘুম’ (কী ঘুমিয়েছি)। আর ঘুমিয়েছি ও ঘুম এই দুটি শব্দের মূল হচ্ছে ‘ঘুম’ 

. প্রযোজক ক্রিয়া : যে ক্রিয়া একজনের  প্রযোজনায় আরেকজন করে তাকে প্রযোজক  ক্রিয়া বলে।
প্রযোজক ক্রিয়াতে দুইজন  কর্তা থাকেন ।এরমধ্যে একজন কর্তা আরেকজন কর্তাকে দিয়ে কাজটি করান ।অর্থাৎ একজন কর্তা যখন একটি কাজ অন্য একজনকে দিয়ে করান ,তখন তাকে প্রযোজক ক্রিয়া বলে ।[সং সকৃত ব্যাকরণে একে ণিজন্ত ক্রিয়া বলে ।
যেমনঃ মা (প্রযোজক কর্তা) শিশুকে ( প্রযোজ্য কর্তা) চাঁদ দেখাচ্ছেন ( প্রযোজ্য ক্রিয়া )
সাপুরে (প্রযোজক কর্তা ) সাপ ( প্রযোজ্য কর্তা) খেলায় ( প্রযোজ্য ক্রিয়া )


বিঃদ্রঃ বিভিন্ন ব্যাকরণ বই , সাইট থেকে সংগৃহিত

Post a Comment

1 Comments